আল্লাহকে হাসালো যারা
হযরত আবু দারদা রা. বর্ণনা করেন যে, রাসূলে কারীম সা. ইরশাদ করেছেন, তিনজন ব্যক্তি এমন আছেন যাদেরকে আল্লাহ তা’আলা মুহাব্বত করেন এবং তাদের উপর সন্তুষ্ট হয়ে হাসেন। তাদের নিয়ে গর্ব করেন।
(১) ঐ ব্যক্তি যে (যুদ্ধের ময়দানে) তার বাহিনী পরাজিত হবার পর একাই লড়তে থাকেন। তারপর হয়তো শহীদ হয়ে যান কিংবা আল্লাহর সাহায্যে তিনি দুশমনদের উপর বিজয় লাভ করেন। এধরণের লোকদের ব্যাপারে আল্লাহ পাক বলেন, ‘দেখ এই ব্যক্তি একাই কিভাবে মজবুতীর সাথে একমাত্র আমার জন্য জিহাদ করেন।
(২) ঐ ব্যক্তি যার বিবি খুবই সুন্দরী, বিছানাও নরম তারপরও রাতে উঠে তাহাজ্জুদ পড়ে। আল্লাহ তার ব্যাপারে গর্ব করে বলেন যে, দেখ এই লোক তার কামভাব-জৈবিক চাহিদা ছেড়ে আমার জন্য নামাযে দাড়িয়ে গেছে। অথচ সে ইচ্ছা করলে শুয়ে থাকতে পারত।
(৩) ঐ ব্যক্তি যে সফরে আছে। তার সাথীরা ঘুমালে সে তাহাজ্জুদে দাড়িয়ে যায়। দরিদ্রতা কিংবা বিপদ-আপদ থাকুক বা না থাকুক। (ফাযায়েলে জিাহদ: ৩৩৫-৩৩৬)
বিজ্ঞবচনঃ
* হাসান বসীর রহ. কে একদিন প্রশ্ন করা হল তাঁর দুনিয়াবিমুখতা ও আখিরাতমুখীতার কারণ কী? উত্তরে তিনি বলেন-
১. আমি জেনেছি আমার রিযিক অন্য কেউ পাবে না, কেড়ে নিতেও পারবেনা। সুতরাং আমার হৃদয় এব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে গেল।
২. আমি জেনেছি আমার আমল অন্য কেউ করে দিবেনা বা পারবেওনা। সুতরাং আমি তাতে মনোনিবেশ করেছি।
৩. আমি জেনেছি আল্লাহ সর্বাবস্থায় আমায় দেখছেন। সুতরাং আমার আল্লাহ যেন আমায় কোন অবাধ্যতা বা পাপে না দেখতে পান তা নিয়ে আমি সদা লজ্জিত, শঙ্কিত ও সচেতন।
৪. আমি জেনেছি মৃত্যু আমার জন্য অপেক্ষমান। সুতরাং আমি আমার রবের সাক্ষাতের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।
** ইমাম মালেক রহ. ও ইমাম শাফেয়ী রহ. বলেছেন, হে মুহাম্মদ! আমলকে আটা আর ইলমকে লবনের মত ব্যবহার কর।
আটা হল আমল, আর লবন হল ইলম। আমরা বেশির ভাগ মানুষ বিদ্যা অর্জন করতে করতে বিদ্যার জাহাজ হয়ে অহংকারের সমুদ্রে ভেসে চলি। যতটুকু বিদ্যা অর্জন করি ততটুকু আমল বা কাজ করি না। শুধু শুধু তর্কের মজলিসে নিজেকে বড় জাহির করি। তাই ইমাম মালেক রহ. যা বলেছেন তার ব্যাখ্যা হল- রুটি তৈরীর সময় অনেক খানি আটা সাথে কয়েক চিমটি লবন দিলেই রুটি হয়ে যায়। আটা ছাড়া লবন দিয়ে কখনও রুটি হয় না। ঠিক তদ্রুপ আমল ছাড়া ইলমের কোন মূল্য নাই। তুমি বিদ্যা যদি লবনের মত হাসিল কর তাহলে আমল কর আটার মত। তাহলেই হবে তোমার জীবন সাফল্যময়।** ফুজায়েল ইবনে আয়াজ রহ. বলেছেন, হে বনি আদম! তুমি যে হাসি-আনন্দে মেতে আছ তুমি কি জান, হয়ত তোমার কাফনের কাপড় তৈরী হয়ে দোকানে চলে এসেছে? (সীরাতে আওলিয়া)
সংগ্রহেঃ মোঃছাঃ ফাতেমা খাতুন